আইক্লাউড লক কি? লক বাইপাস করার উপায়?

যেহেতু প্রযুক্তির উপরে আমার আগ্রহ বেশি তাই ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল যে করেই হোক একটা আইফোন ব্যবহার করবই। মামার কাছ থেকে শুনেছিলাম অ্যাপলের ফোনগুলোর দাম প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি। ভাবলাম এত দামি ফোন তো কেনা সম্ভব না এটার আশা ছেড়েই দেই। সে সময়ে আবার আমাদের বয়সী ছাত্রদের মাঝে জনপ্রিয় ছিল এমপি৪/৫ নামক ডিভাইসগুল।  ঈদের পর ৩-৪ হাজার টাকা জমিয়ে আমি আর আমার বন্ধু মিলে একটি এমপি৪ কিনতে গেলাম গুলিস্থানের স্টেডিয়াম মার্কেটে।  দুই তিন দোকান ঘুরতেই দেখলাম পাশে পুরাতন মোবাইলের ছোট ছোট কিছু দোকানও আছে, চোখ পড়ল আইফোনের উপর! দেখে চোখ চক চক করে উঠলেও প্রথমে দাম জিগ্যেস করতে সাহস পাচ্ছিলাম না, তারপর ভাবলাম এগুলো তো পুরনো তাহলে একবার জিগ্যেস করেই দেখি। ৬ হাজার টাকা দাম শুনেই আমার খুশি আর ধরেনা, বলেই বসলাম নকল নাতো সেট? দোকানদার বললো নকল হইলে নিতে হবেনা। খুশিমনে আইফোনখানা দেখার চালু করতেই পাসওয়ার্ড চাচ্ছে, পাসওয়ার্ড জিগ্যেস করলে বললো এটা খুলে নিতে হবে বাহিরে থেকে। আমিতো দামাদামি শুরুই করে দিয়েছিলাম খুশিতে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দামে মিললো না বলে ফিরেই এলাম।
মাস ছয়েক পর মামা বাড়িতে আসলে তাকে পুরো ঘটনাটা বললাম। শুনে মামা বললেন কখনও না জেনে/বুঝে পুরাতন মোবাইল কিনতে যাবেনা, এই মোবাইলগুলো চোরাই তাই লক হয়ে আছে। এবং এই লক নোকিয়া মোবাইলের মত দোকানে নিয়ে গেলেই ফ্ল্যাশ করে ব্যবহার করা যায়না। এটা অ্যাপলের আইক্লাউড লক।


মূলত আইক্লাউড লক ফোন হচ্ছে চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া ফোন যেটায় ৩ বার ভুল পিন দেওয়ার ফলে অ্যাপল আইডি দিয়ে ফোনটা লক করে দেওয়া হয়। যাতে আসল মালিক ছাড়া অন্য কেউ তথ্যগুলো ব্যবহার করতে না পারে! আর মালিক যদি আইইএমআই দিয়ে জিডি করে তাহলে পুলিশ জিপিএস ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে আপনার পিছু নেবে!!
আর একটা বিষয় হচ্ছে আইক্লাউড লক খুলতে আসলে এফবিআই এর ও ঢোক গিলতে হয়, যারা বলে খোলা যায় তারা আসলে মাদারবোর্ডে থাকা নিচের ছবির মত দেখতে চিপ টা পাল্টে নকল চিপ লাগিয়ে দেয়! আমাদের দেশীয় প্রযুক্তিতে আইফোন আনলক করা অসম্ভব।


আইক্লাউড একটা ইমেইল আর পাসওয়ার্ড এর ব্যাপার, এটা খুলতে হলে আসল মালিকের কাছ থেকে আইডি এবং পাসওয়ার্ড লাগবে, হাজার হাজার টাকা দিলেও এটা খোলা সম্ভব নয়!
আর চিপ বদলানোর পর তো যদি দেখেন আইক্লাউড লক বাইপাস হয়ে গেছে তাহলে ভুলেও ভাববেন না আপনি আইফোনটির মালিক হয়ে গেলেন। কারন এই চিপ বদলানোর পর আপনি না পারবেন সিম ব্যবহার করতে না পারবেন ঠিকমতো আইটিউন্স বা অ্যাপ স্টোর থেকে প্রয়োজনীয় কিছু নামাতে। অর্থাৎ আপনি ৪-৭ হাজার টাকা খরচ করে আইফোনের একখানা বডি কিনলেন মাত্র। আর যারা একটু পটু তারা পেলেন একটি এমপিফোর।
সুতরাং যারা এধরনের ফোন কিনবেন এবং না বুঝে কিনবেন অবশ্যই আইডি এবং পাসওয়ার্ডসহ কিনবেন এবং কেনার সাথে সাথে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে নিবেন, যদি আইডি ও পাসওয়ার্ড না দিতে পারে তাহলে বুঝবেন সে ফোনটি চুরি করে এনেছে! আর যারা মনে করেন কিনে নেই তারপর আন্ড্রয়েড মোবাইলের মত তুড়িতে আনলক করব তাদের জন্য একখানা এমপিফোর গিফট।
ভালো থাকবেন, আজ এ পর্যন্তই। কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। 

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড চোরদের ব্লক করুন এক নিমিষেই

ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে কি করবেন?