কোন এক সন্ধ্যায়, ছোটগল্প

কোন এক মধ্যসন্ধায়, শহরের সরু গলি ধরে তাহিয়াকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। তাহিয়ার সাথে পরিচয় মাত্র দু-মাস, অথচ সখ্যতায় মাপলে হবে কয়েক যুগ। শ্রোতা হিসেবে তাহিয়ার তুলনা হয়না, এ যুগের কালো সন্ধায় অবলীলায় কথা বলার এমন কাউকে পাওয়া শুধু যে ভাগ্যের ব্যাপার তা বললেও ভুল হবে।

 কলেজে তো কমল স্যারের বেতের বাড়ির ভয়ে কথা তো তেমন কারো সাথে বলাই হয়না, তবে তাহিয়ার সাথে ভালো সখ্যতা হওয়ায় ক্লাশ শেষে সে আর আমাকে হই হই করে বাড়িতে ছুটে যেতে দেয়না। সন্ধ্যায় নাকি তার একা বাড়ি যেতে ভয় হয়। 
আমি কথা বললে তাহিয়া যেমন মন দিয়ে শোনে, তেমনি চুপ থাকলে সেও কথা বলানোর জন্য হাজারটা প্রশ্ন করে। হয়তো আজকে একটু বেশি কৌতুহলবশত প্রশ্ন করে বসলো, "কলেজে আমি ছাড়া তোমার আর কোন বন্ধু নেই?" 
যার সাথে কয়েক ক্রোশ হাঁটলে পুলসিরাত পাড়ি দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তাকে কি আর ফেরানো যায়! সত্যটা বলেই ফেললাম, তাহিয়া জানো; সম্পর্ক গড়া আর রক্ষায় কোনটাতেই আমি ভালো না।মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক বেশিদিন টিকে না, বদলে যায়। এই যে, আজ তোমার সাথে যেমন পায়ে পায়ে তাল মিলিয়ে হাঁটছি, কথা বলছি। এক মাস পর এমন নাও থাকতে পারে।

একথা আমি তাহিয়াকে বলার পর, কেন বলছি ভেবে কিছুক্ষন চুপ করে রইলাম। এদিকে  তাহিয়ার মুখেও কোন কথা নেই, প্রশ্ন নেই। মনে হয় এক বালতি লিকুইড নাইট্রোজেন কেউ তার উপর ঢেলে দিয়েছে। থমকে দাঁড়িয়ে রয়েছে মূর্তির মত, সোডিয়ামের আলোয় মনে হচ্ছে এ যেন দেবীর দর্শন পেয়েছি! সর্বগ্রাস করা সেই মায়াবিনী চোখ যেন কুয়াশায় চাদরে ভেজা ছল ছল শিশির ফোটার এক ভাণ্ডার...............
(চলবে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আইক্লাউড লক কি? লক বাইপাস করার উপায়?

জীবনে সুখী হতে চান?

Once in a lifetime opportunity for Millennials and Generation Z of Bangladesh