পোস্টগুলি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অহংকার দাম্ভিকতা!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় এক অধ্যাপক আমাদের পার্ট টাইম ফ্যাকাল্টি ছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে আমার সুযোগ হয়েছিল তার ক্লাশ করার।  প্রথম পরীক্ষার দিন, আমার ব্রেইনে আবার পড়ালেখার জায়গাটা কম হওয়ায় বেশি নিয়ে যেতে পারিনি, তাই পরীক্ষার খাতায় কম লিখে সবার আগেই বের হয়ে যেতে নিলাম।  ব্যাগ গুছিয়ে কাঁধে নিতেই দেখি স্যার আমার দিকেই আসছেন! ভাবলাম কি ব্যাপার, নেম আইডি কি না লিখেই খাতা জমা দিলাম নাকি কম লিখা দেখে আমাকে কিছু জিগ্যেস করবে ! ভয়ে আমাড় বুক ধড়ফড়-ধড়ফড়!   কিন্তু না, এ যাত্রায় মনে হয় বেঁচে গেলাম। তিনি দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন। এবার ভাবলাম তিনি হয়তো বাহিরে যাবেন, আমিও দরজা টেনে ধরার জন্য এগিয়ে গেলাম কিন্তু না, তিনিই দরজার হাতল ধরে আমাকে বললেন প্লিজ। ভাবলাম আমার পরেই হয়ত তিনি বের হবেন, সবার সামনে কিছু বলতে চাচ্ছেন না!  এবারও তিনি আমাকে হতাশ করলেন। আমি বের হবার পর আবার দরজাটা লাগিয়ে দিলেন। সেইদিন সবারই যাবার পথে তিনি এই কাজটাই করেছেন। পরের দিন জানতে পারলাম তিনি জাপান থেকে ডক্টরেট করা, কারো জন্য দরজা খুলে দেওয়া নাকি সেখানের স্বাভাবিক ভদ্রতা।

ডিজিটাল মিনিমালিস্ট

প্রায়ই এমন কিছু বই অর্ডার আসে যার এক পিসও আমার স্টকে অবশিষ্ট নেই। সেই সুবাদে বইয়ের বাজারে আমার আনাগোনা অহরহ।  সেদিন সম্ভবত বুধবার, সঙ্গী হিসেবে সাথে ছিল অপূর্ব। বাবা-মা মনে হয় ছেলেটার ব্রেইনের কারিশমা আগেই আন্দাজ করতে পেরে এই নামটাই রেখে দিয়েছিল নয়তো এই নামের কারনেই কারিশমা লেগে গেছে! তা যাই হউক, অপূর্বর সাথে পরিচয় অন্য একদিন করিয়ে দিব।  কি কারনে আবার যেন সেদিন ফ্লাইওভার বন্ধ ছিল, কি মুশকিল! নিচ দিয়ে বাইক ঠেলাগাড়ির মত ঠেলতে ঠেলতে আর কথা বলতে বলতে কখন যে পৌঁছে গেসি সেদিকে কারো খেয়ালই নেই।  এখানেও খোশগল্প করে গল্প শেষ না করে গল্পটা বলি;  কি কারনে যেন কিছু সাপ্লাইয়ার আমাকে দেখে বেজায় খুশি হয়। খুশি থাকলেও এদের অনেকের সাথে দরদাম করে কিছুতেই যেন দাম কমাতে পারিনা -_-। সেদিনও পারলাম না,  এক দোকান থেকে আরেক দোকান যাচ্ছি আর বাড়ছে বইয়ের বোঝা। অপূর্ব মনে হয় কিঞ্চিৎ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। ছেলেটা আবার বেশিক্ষন চিন্তায় থাকতে পারেনা, সে বই ছাড়িয়া তাহার দিকে আমাকে কর্ণপাত করিতে বলিল!  "আচ্ছা, তুই যে এত বই নিচ্ছস এগুলার একটাও তোর পড়া হইসে?" মুহূর্তেই মধ্যেই আমি আবার বই বাছাইয়ে...

তুমি এত সহজেই ভুলতে পারো!

তুমি এত সহজেই ভুলতে পারো, অন্য কাউকে জড়িয়ে ধর।  আমি কেন শুধু ভুলে যেতে পারিনা।   আজ অবাক লাগে তোমায় দেখে, আমায় আজ তোমার অচেনা লাগে।  এত ভালো অভিনয় কেন জানি না।

মার্কেটিং মেজর কেন বেঁছে নিলাম

ফাইনাল পরীক্ষার ঠিক দুদিন আগে, সেমিস্টারের শেষ ক্লাশ বলে কথা। ফ্যাকাল্টিঃ আপনারা কোর্স বা পরীক্ষা সম্পর্কিত যে কোন প্রশ্ন থাকলে সেটা এখন জিজ্ঞেস করতে পারেন।   প্রথম সারিতে বসে থাকা এক  ছাত্রঃ স্যার, হুবাহু বই এবং স্লাইডস থেকে লিখেও কম নাম্বার পাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি?  ফ্যাকাল্টিঃ আমাদের ফোনগুলোর প্রসেসিং স্পীড অন্য যে কোন স্মার্টফোনের তুলনায় ৩০ ভাগ দ্রুত গতির, রেটিনা ডিসপ্লে যা আপনাকে দিবে প্রাণবন্ত ছবির অভিজ্ঞতা। টাচ ডিসপ্লে হলেও আলাদা কোন স্টাইলাস পেন লাগবে না, আমরা যে হাত নিয়ে জন্মেছি সেই হাতের স্পর্শেই কাজ করবে। উপস্থাপনায়  স্টিভ জবস বললেই পারতেন "১ গিগাহার্জ ২ কোর বিশিষ্ট প্রসেসর, ১ জিবি ডিডিয়ার র‍্যাম, আইপিএস ১৫.৭ মিলিয়ন কালার ক্যাপটিভ মাল্টি ফিঙ্গার টাচ ডিসপ্লে" কিন্তু তা সবার নিকট বোধগম্য হত কি? মার্কেটিং মানেই যে সেলস, অ্যাডস ব্যপারটা এমন না। কতটা বোধগম্য করে আপনি আপনার অডিয়েন্সের সামনে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসকে উপস্থাপন করতে পারেন তার উপরেও আপনার প্রোডাক্টের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে।  " আপনি প...

কোন এক সন্ধ্যায়, ছোটগল্প

কোন এক মধ্যসন্ধায়, শহরের সরু গলি ধরে তাহিয়াকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। তাহিয়ার সাথে পরিচয় মাত্র দু-মাস, অথচ সখ্যতায় মাপলে হবে কয়েক যুগ। শ্রোতা হিসেবে তাহিয়ার তুলনা হয়না, এ যুগের কালো সন্ধায় অবলীলায় কথা বলার এমন কাউকে পাওয়া শুধু যে ভাগ্যের ব্যাপার তা বললেও ভুল হবে।  কলেজে তো কমল স্যারের বেতের বাড়ির ভয়ে কথা তো তেমন কারো সাথে বলাই হয়না, তবে তাহিয়ার সাথে ভালো সখ্যতা হওয়ায় ক্লাশ শেষে সে আর আমাকে হই হই করে বাড়িতে ছুটে যেতে দেয়না। সন্ধ্যায় নাকি তার একা বাড়ি যেতে ভয় হয়।  আমি কথা বললে তাহিয়া যেমন মন দিয়ে শোনে, তেমনি চুপ থাকলে সেও কথা বলানোর জন্য হাজারটা প্রশ্ন করে। হয়তো আজকে একটু বেশি কৌতুহলবশত প্রশ্ন করে বসলো, "কলেজে আমি ছাড়া তোমার আর কোন বন্ধু নেই?"  যার সাথে কয়েক ক্রোশ হাঁটলে পুলসিরাত পাড়ি দেওয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তাকে কি আর ফেরানো যায়! সত্যটা বলেই ফেললাম, তাহিয়া জানো; সম্পর্ক গড়া আর রক্ষায় কোনটাতেই আমি ভালো না।মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক বেশিদিন টিকে না, বদলে যায়। এই যে, আজ তোমার সাথে যেমন পায়ে পায়ে তাল মিলিয়ে হাঁটছি, কথা বলছি। এক মাস পর এমন নাও থাকতে পারে। একথা আমি তাহিয়াকে বলার প...

ডেটা অ্যানালিটিক্সের যুগে টেক স্টার্টআপগুলোর ভুল

বেশিরভাগ টেক স্টার্টআপই ব্যবসা শুরু করতে ডেটা অ্যানালিটিক্সকে দেখে অনেকটা রকেট লঞ্চের মত।  অ্যানালিটিক্স এর উপর এতই ভরসা থাকে যে, পাই টু পাই হিসাব করে তারা মার্কেটে নিজেদের অবস্থান গড়তে চায়। হয়ত তার যথেষ্ট যুক্তিগত কারণও রয়েছে তাদের কাছে। ফলে মার্কেটে আসার পর ফলাফলটিও হয় রকেট লঞ্চের মতই। রকেট লঞ্চ করার সময় যদি সামান্য .০০০০১ ভাগ কোন কিছুতে উলট পালট হয় তাহলে মুহূর্তেই ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তেমনি ডেটার উপর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে মার্কেটে নামা স্টার্টআপগুলো মার্কেটের সামান্য পরিবর্তন হলে কিংবা  অ্যানালিটিক্সের ডেটায় সামান্য পরিমাণ ক্রুটি থাকলেই ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মত।   ডেটা অ্যানালিটিক্সেকে রকেট লঞ্চের চোখে না দেখে আমরা যদি এটাকে একটা গাড়ির চালানোর মত করে মনে করি তাহলেই  ডেটা অ্যানালিটিক্সেকে আর বেশি কার্যকরী করা সম্ভব। ধরুন আপনি মতিঝিল থেকে শাহবাগ যাচ্ছেন গাড়ি চালিয়ে, যাওয়ার সময় রাস্তা অনুযায়ী আপনার গাড়িতে থাকা স্টিয়ারিং হুইল দিয়ে রাস্তার সাথে নিজের গাড়িকে মানিয়ে নিচ্ছেন। হটাৎ করে থামতে হলে ব্রেক চাপছেন। ঠিক তেমনি গাড়িকে আপনার স্টার্টআপ, আপনার ম্যানেজম...

ইভ্যালির নতুন চমক, সাইক্লোন বুড়ি

 সে অনেক দিন আগের কথা। এক জঙ্গলে এক বুড়িমা বাস করত। প্রতিদিন রান্নার সময় আগুন জ্বালানোটা তার জন্য কঠিন হয়ে যেতো। কারণ তখনতো আর ম্যাচের কাঠি ছিল না। পাথর ঘষে ঘষে আগুন জ্বালাতে হতো। একদিন আকাশ কালো করে সাইক্লোন শুরু হলো। সাইক্লোনে সব ভিজে নেয়ে একাকার। বুড়ি রান্নার জন্য পাথর ঘষছে, অমনি পাথর থেকে ধোয়া বেরোতে থাকল। হাজির হলো মস্ত এক জ্বীন। আসলে ওটা পাথর ছিল না। ওটা ছিল ইভ্যালি নামক চেরাগ। জ্বীন হু হা হা করে হেসে বলল, আমি এই চেরাগের জ্বীন রাসেল। বুড়ি মা তোর কি লাগবে বল। বুড়ি বলল, প্রতিদিন  আমার আগুন জ্বালাতে অনেক কষ্ট হয়। কিছু একটা ব্যবস্থা যদি করা যায়। জ্বীন হাসতে হাসতে বলল, এটা আমর জন্য কোন ঘটনা-ই না। আমি তোমার জন্য ওভেনের ব্যবস্থা করছি। তবে দিনকালতো আর আগের মতো নেই। কিছু একটা আনতে গেলে সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স দিতে হয়, আরো কত খরচ, দুনিয়ার ঝামেলা। তোমাকেতো পে করতে হবে। বুড়ি অমনি কাপড়ের আঁচল থেকে যা ছিল সব দিয়ে দিল। জ্বীন ওভেন আনতে চলে গেলো। দিন যায়, মাস যায়, জ্বীন আর আসে না। এদিকে বুড়ি অপেক্ষা করতে করতে বুড়ি থেকে বুড়ি প্রো হয়ে যাচ্ছে। বুড়ি, পাতার মধ্যে অর্ডার নাম্বার লিখে চেরাগের ভেত...